দিনহাটার ঐতিহাসিক গোসানীমারি রাজপাটের অসমাপ্ত খনন কার্য সমাপ্ত করার জোরালো দাবি উঠছে ।
দিনহাটাঃ দিনহাটার ঐতিহাসিক
গোসানীমারি রাজপাটের অসমাপ্ত খনন কার্য সমাপ্ত করার জোরালো দাবি উঠছে । গোসানিমারি
নাগরিক মঞ্চের সহ সম্পাদক প্রদীপ ঝা জানান “ কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষন
বিভাগ থেকে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০০ সাল অবধি
খনন কার্য চালানো হয় । এর পর অজ্ঞাত কারনে অসম্পূর্ণ অবস্থায় খনন কার্য বন্ধ রেখে
চলে যায় কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষন
বিভাগ এর দল । খনন কার্য সম্পুর্ন হলে অনেক অজানা কোচবিহারের
ইতিহাস সম্পর্কে জানা যাবে। “ নাগরিক মঞ্চের
পক্ষ থেকে আরোও দাবি করা হয় খনন কার্যের ফলে উদ্ধার হওয়া জিনিস গুলি কোচবিহার রাজ
বাড়ি মিউজিয়ামে না রেখে গোসানিমারিতে মিউজিয়াম করে রাখা হোক । গোসানীমারি রাজপাট
কে ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষনা
করা হোক ।
কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষন
বিভাগ এর গোসানীমারি রাজপাটে লাগানো বোর্ড থেকে জানা যায় প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী বর্তমান
গোসানীমারির রাজপাট ঢিপিটি হল কামতাপুরের মুল দুর্গ। কামতাপুর ছিল কামতা রাজ্যের
রাজধানী। খেন বংশীয় রাজারা এখানে রাজত্ব করত । কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষন
বিভাগ দু বছর ধরে উৎখনন ও অনুসন্ধান চালায়
করে এই এলাকায় । এর ফলে আবিষ্কৃত হয়েছে বিশাল ইটের প্রাচীর , পাতকুয়া,
প্রস্তর নির্মিত সৌধের ধ্বংসাবশেষ , দক্ষিন দিকে ইটের তৈরী সমান্তরাল দুটি দেওয়াল
,একটি পুরষ্করনী, প্রলম্বিত দেওয়ালের ভিত। এগুলির নির্মানকাল নবম দশম থেকে অষ্টাদশ
উনবিংশ শতক । উৎখননের ফলে প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য প্রত্ন বস্তু গুলি হল পোড়ামাটির দেব
দেবী ও জীব জন্তুর মুর্তি ,ফলক , সুলতানি আমলের রৌপ্য মুদ্রা , ইস্ট ইন্ডিয়া
কোম্পানী রৌপ্য ও তাম্র মুদ্রা , লৌহ নির্মিত জিনিস পত্র । এছাড়াও অসংখ্য ভগ্ন
প্রস্তর ভাস্কর্য্য যেগুলি মনে করা হচ্ছে পাল ও সেন যুগের ভাস্কর্য্য শৈলীর দ্বারা
প্রভাবিত ।
গোসানীমারি নাগরিক মঞ্চ জানায় খনন
কার্যের ফলে পাওয়া বেশীর ভাগ প্রত্নতত্ব জিনিস কোচবিহার রাজ বাড়ি মিউজিয়ামে রাখে
কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষন বিভাগ। তাদের দাবি গোসানীমারির প্রত্ন তত্ব সম্পদ
গোসানীমারিতে মিউজিয়াম বানিয়ে রাখতে হবে ।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা
এখানে গোসানীমারি রাজপাট এলাকায় বেড়াতে আসেন । এখানে মিউজিয়াম বানিয়ে প্রত্নতত্ত্ব
জিনিস গুলি রাখলে পর্যটক সংখ্যা আরোও বাড়বে । পর্যটকেরা আরোও বিশদে জানতে পারবে এই এলাকার ইতিহাস।
গোসানীমারি রাজপাট এলাকাকে অবিলম্বে
ঐতিহাসিক পর্যটক কেন্দ্র হিসেবে ঘোষনা করতে হবে । এই এলাকার অসমাপ্ত খনন কার্য
দ্রুত শেষ করে ফেলা দরকার । খনন কার্য শেষ হলে কোচ বিহারের ইতিহাসের হয়ত অনেক
অমীমাংসীত প্রশ্নের উত্তর মিলবে ।
No comments